একবাক্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হত্যা রহস্য বলে একে স্বীকার করবেন অনেকেই এবং সবচাইতে রহস্যময় খুনী হচ্ছে এই জ্যাক দ্যা রিপার। শুধু রহস্যময়ই নয়, ভয়াবহ নৃশংস। তবে প্রায় ২৫ বছর পরে হলেও সেই হত্যা রহস্যের সমাধান হয়েছে গত রবিবার। আর তা হয়েছে মূলত আধুনিক ফরেনসিক সায়েন্সর কল্যাণে। ব্রিটনের দ্য মেইল পত্রিকা এমনটিই দাবি করেছে।
১৯৮৮ সালে পূর্ব লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেলে অন্তত পাঁচটি হত্যাকাণ্ড সংঘটনকারী সেই জ্যাক দ্য রিপারের আসল পরিচয় ফাঁস হয়ে গেছে। সাবেক স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড খুনিকে ধরতে পারেনি। শুধু নাম দিয়েছিল ‘জ্যাক দ্য রিপার’। প্রথম কোপে গলার নলি ফাঁক, তারপর নিহতদের পেট চিড়ে কারো জরায়ু, কারো কিডনি বের করে নেওয়া নৃশংসতায় ‘অদ্বিতীয়’ হয়ে দাঁড়িয়েছিল সে। এসব ঘটনায় সন্দেহের তালিকায় ছিলেন না রাণী ভিক্টোরিয়ার নাতি থেকে শুরু করে চিত্রকর ওয়াল্টার সিকার্ট পর্যন্ত অনেকেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হলো, জ্যাক দ্য রিপার আসলে এক পোলিশ ল্যুনেটিক অ্যারন কসমিনস্কি।
এখন প্রশ্ন উঠছে, তা হলে শতাব্দী প্রাচীন রিপারকে কীভাবে চেনা গেল? এর পিছনেও রয়েছে প্রায় এক অবিশ্বাস্য কাহিনী। ২০০৭ সালে এক নিলামে রাসেল এডওয়ার্ড নামে এক ব্যবসায়ী একটি শাল কিনেছিলেন। নিলামের সময় তিনি শুধু জানতেন, শালটি রিপার-রহস্যের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু পরে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ করতে গিয়ে জানতে পারেন, শালটি ক্যাথরিন এডওয়ে হত্যার সময় খুঁজে পেয়েছিল পুলিশ। রাসেল এটি নিয়ে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান। তখনই সেখানে দুই ব্যক্তির শতাব্দী প্রাচীন ডিএনএর সন্ধান মেলে। সন্দেহের নিরসন করতে রাসেলের অনুরোধে বিশেষ প্রক্রিয়ায় শাল থেকে ১২৬ বছরের পুরনো ডিএনএর নমুনা সংগ্রহ করেন বিশেষজ্ঞ জারি লৌহেলেনেন। আর তারপর ক্যাথরিনের উত্তরসূরির সঙ্গে ডিএনএর নমুনা দু’টি মেলান। একটার সঙ্গে মিলও পাওয়া যায়। অর্থাৎ একটি ডিএনএ ক্যাথরিনের।
কিন্তু দ্বিতীয়টি কার? বিভিন্ন প্রমাণ দেখে রাসেলের সন্দেহ হয়েছিল অ্যারনই খুনি। তাই অ্যারনের এক উত্তরসূরির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন তিনি। আর তারপর শুরু হয় দ্বিতীয় ডিএনএর সঙ্গে মিল খোঁজার কাজ। এখানেও সাফল্য। অ্যারনের উত্তরসূরির সঙ্গে অবিশ্বাস্য মিল রয়েছে দ্বিতীয় ডিএনএর। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায় পুরো চিত্রটা।
সৌজন্য- বাংলাদেশ প্রতিদিন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন